বেনারসের গল্প ১ – বেনারসের খান-পান
“একে স্থান কাশী, তাহাতে রাত্রিকাল। রাত্রি দশটার সময় এরূপ অল্পবয়স্ক বাঙ্গালীর মেয়ে ঘর হইতে বাহির হইয়াছে কেন? বালিকা কি হতভাগিনী? …”
ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের “ফোকলা দিগম্বর” গল্পের একাকিনী কুসী হতভাগিনী ছিল কিনা জানি না , তবে এখনকার বেনারস রাত দশটাতেও যথেষ্ট জমজমাট | অন্তত গোধুলিয়া মোড়ের অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে বা কাশী চাট ভান্ডারের সামনে “চাটুরে” খরিদ্দারদের উপচে পড়া ভীড় দেখে তেমনটাই মনে হয় |
শুধু বিশ্বনাথের গলিই নয় , শ্যামাচরণ লাহিড়ী স্ট্রিট, চারুচন্দ্র মিত্র লেন, কাশীনাথ বিশ্বাস রোড , দশাশ্বমেধ ঘাটের রাস্তাতেও রাতভর অগুণতি মানুষের ঢল , ভীড় থাকে মনিকর্ণিকা ঘাটেও ।
এদের মধ্যে বেশিরভাগই পুণ্যার্থী , কেউ বা এসেছেন মোক্ষলাভের আসায় , আবার কেউ কেউ নেহাতই ভবঘুরে , ভারতের প্রাচীনতম শহরকে চাক্ষুস করতে এবং জানতে এসেছে নিজের মতো করে | তবে , মণিকর্ণিকা যাওয়ার রাস্তাতে , বিশেষ করে কচুরি গলিতে শ্মশানবন্ধুর সংখ্যাই বেশি | এই এলাকায় বেশ কিছু কচুরি সিঙ্গাড়ার দোকান আর চায়ের ঠেক অনেক রাত অবধি খোলা থাকে এই শ্মশানযাত্রীদের জন্য | বেশির ভাগ দোকানের সামনেই দু’এক ধাপ সিঁড়ি , কারণ জোয়ারের সময় বিশেষ করে বর্ষাকালে গঙ্গার জল ঢুকে আসে এই সব বাড়ি গুলোর একতলায় | বেশিরভাগ দোকানের ছবি মোটামুটি এক | কাঠের পাটাতনের ওপর দোকানী বসে আছে পাশে কাঁচ লাগানো কাঠের শোকেসে থরে থরে মিষ্টি সাজানো | তারমধ্যে বেশিরভাগই লাড্ডু ও প্যাঁড়া জাতীয় বেসন ও ক্ষীরের মিষ্টি | দোকানীর সামনে কাঁসার বড় বগিথালায় করে সামোসা ও নানানা ধরণের পকোড়া সাজানো রয়েছে | একপাশে একটা উনুন রাবনের চিতার মতো সারাক্ষণ জ্বলছে | তাতে বড় লোহার কড়াই চাপানো আছে | কোন পকোড়া কতটা পরিমানে নেবেন সেটা বলে দিলে দোকানী কাঁসার থালা থেকে সেগুলি নিয়ে লোহার কড়াইয়ের ফুটন্ত তেলে তাদের একবার স্নান করিয়ে আনেন | তারপর গরম তেলে সদ্যস্নাত মুচমুচে পকোড়া বা সামোসার ওপরে ছড়িয়ে দেন কিছুটা খোসা সমেত সিদ্ধ করা গোটামুগ ডাল আর মিহি করে কুচোনো মুলোর স্যালাড , তার ওপরে ধনে পাতা পুদিনার ‘হরি চাটনি ‘ | কলকাতার মতো পাতলা খোলের মধ্যে ফুলকপি আলু আর চিনাবাদামের পুরভরা ছাপোষা বাঙালি সিঙ্গাড়ার সঙ্গে এই চটকদার রঙ্গিলা সামোসার বর্নে গন্ধে ছন্দে গীতিতে খুবএকটা মিল নেই বললেই চলে | এই গলিতেই নজরে পরে একচিলতে একটা ছোট্ট খুপরি তেলেভাজার দোকান যার অন্তরে বাহিরে জন-অরণ্য | স্বামী-স্ত্রী মিলে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ক্ষিপ্রহস্তে দোকান সামলাচ্ছেন | মুখ দেখে নেপালি বা ভুটানি বোঝার উপায় নেই বটে , তবে পাহাড়ি বলে বেশ বোঝা যায় | এখানে কোনো তেলেভাজাই আগে থেকে ভেজে রাখা হয় না , যে যা কিনতে চান সেটা বললে সঙ্গে সঙ্গে ভেজে দেওয়া হয় | ওই টুকু এক চিলতে দোকানের ঠাসাঠাসি ভীড় দেখলেই বোঝা যায় পকোড়ার স্বাদ কেমন হবে | সামোসা , পকোড়ার পর চা তেষ্টা পাওয়া দোষের নয় | সে ব্যবস্থাও আছে | মণিকর্ণিকার ঘাটের লাগোয়া কয়েকটা চায়ের দোকান আছে বটে , তবে সেসব দোকানে স্থানীয় ছেলে-ছোকরা , সৎকারের কাজে নিযুক্ত ডোম আর শববাহী লোকজনের ভীড় লেগে থাকে কারণ , বেনারসে বেড়াতে এসে চা খেতে খেতে মড়া পোড়ানোর দৃশ্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করবেন এমন হৃদয়হীন ভ্রমণপিপাসু মানুষ অথবা তীর্থযাত্রী বড়ই দুর্লভ | মণিকর্ণিকার ঘাটের থেকে সিঁড়ি দিয়ে উঠেই যে সর্পিল গলিপথ দিয়ে গোধুলিয়ার মোড়ের দিকে যাওয়া যায় , সে রাস্তার নাম কচুরি গলি | এই গলিতেই আছে বিদেশী পর্যটকদের কাছে অবশ্য-দর্শনীয় দেশী লাস্যির দোকান – ব্লু লাস্যি শপ |
রাস্তা থেকে দু-তিন ধাপ সিঁড়ি উপরে উঠে সরু লম্বাটে একটা প্রায়ান্ধকার দোকান | দোকানে আসবাব বলতে কয়েকটা লম্বা সরু কাঠের তক্তা লাগানো বেঞ্চ, অনেকটা স্কুলের বেঞ্চের মতো | তাতে প্রচুর বিদেশী পর্যটক বসে আছেন মাটির ভাঁড় হাতে | দেওয়ালে অসংখ্য চিরকুট সাঁটা, দোকানে যাঁরা আসেন তাঁরা তাঁদের ভালো লাগার কথা ওভাবে লিখে রেখে যান। নয় নয় করে তা প্রায় একশো কুড়ি রকমের লস্যি পাওয়া যায় বেনারসের কচুরি গলির এই এক চিলতে দোকানে। বেনারসের বিখ্যাত ‘মালাই মার কে’ কেশর লস্যি তো আছেই সঙ্গে আছে ব্যানানা লস্যি, আপেল লস্যি, চকলেট লস্যি আর মিক্সডফ্রুট লস্যিও । কেশরিয়া লস্যি ছাড়া বাকি সব লস্যিতেই চকলেট পাউডার বা চকোলেট গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয়।
” কাশীতে আসিয়া হরিহরের আয়ও বাড়িল। কয়েক স্থানে হাঁটাহাঁটি করিয়া সে করেকটি মন্দিরে নিত্য পুরাণ-পাঠের কার্য যোগাড় করিল।”
একটা সময় ছিল যখন হরিহরের মতো বহু মানুষ রুজি রোজগারের আশায় নিজের সামান্যতম পুঁজিকে সম্বল করে কাশীতে আসতেন ভাগ্যন্নেষনে | পান্নালাল যাদবও তার ব্যতিক্রম নন | পান্নালাল বিহার থেকে ভাগ্যন্নেষনে এসেছিলেন গঙ্গাতীরের এই প্রাচীন শহরে | তাঁর ‘ব্যাঙের আধুলি’ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন কচুরি গলির এই এক চিলতে লস্যির দোকানটা | মণিকর্ণিকা থেকে ফিরতি পথে ক্লান্ত শ্রান্ত শ্মশানবন্ধুরা দুদণ্ড দাঁড়িয়ে ঠাণ্ডা লস্যি খেয়ে একটু থিতু হতেন | ক্রমে ক্রমে লোকমুখে ‘পান্নালাল লস্যি ওয়ালা’র দোকানের কথা ছড়িয়ে পড়ল আশপাশের গলি-মহল্লায় | তা প্রায় নয় নয় করে একশো বছর হতে চললো |
সত্যজিৎ রায়ের একটা সিনেমায় এই দোকানের মালিক পান্নালালকে একঝলক দেখা গিয়েছিল | মনে পড়ে ? জয় বাবা ফেলুনাথের সেই দৃশ্যটা ,যেখানে ফেলুদা, তোপসে আর লালমোহন বাবু কাশীর সরু গলি দিয়ে চলেছেন মগনলাল মেঘরাজের আস্তানায় ? ওই দৃশ্যে যে লোকটি তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তিনিই এই ব্লু লস্যি শপের প্রতিষ্ঠাতা। ওনার পর ওনার ছেলে বিজয় যাদব দোকানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনপুরুষের এই দোকানের নামকরণের রহস্য শুনিয়েছিলেন পান্নালালের নাতি, প্রায় বছর চল্লিশেক আগে নাকি এক কোরিয়ান মহিলা এই দোকানে আসেন এবং এখানকার লস্যি খেয়ে এই দোকানের লস্যির স্বাদ স্মৃতির ঝুলিতে ভরে নিয়ে যান। দেশে ফিরে গিয়ে কাশীর কচুড়ি গলির এই দোকানের কথা উল্লেখ করেন তার বইতে , তবে নাম মনে না থাকায় দোকানের নীলরঙের কথাই উল্লেখ করেন তার বইতে আর সেই থেকেই এই দোকান বিদেশী পর্যটকদের কাছে ‘ ব্লু লাস্যি শপ ‘এই নামেই প্রসিদ্ধ। শোনা যায় ২০০৪-এ নীল রঙে রাঙানো এই দোকানের নাম বদলে ‘ ব্লু লস্যি শপ ‘ রাখা হয় পাকাপাকি ভাবে। চা , কচুরি , সিঙ্গাড়া , তেলেভাজা এসব বৈকালীন আহারাদিতো বটেই প্রাতঃরাশের ক্ষেত্রেও প্রচুর বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায় | বেনারসের খাবারের আসল রসাস্বাদন করতে হলে আপনার কাশীবাসের দিনগুলোতে একেবারের জন্য ভুলে যেতে হবে যে আপনি গ্যাস অম্বলে ভোগা এক পেটরোগা বাঙালি | কারণ , এখানকার বেশিরভাগ খাবারই দেশী ঘিতে অবগাহন করতে অভ্যস্ত | স্থানীয় লোকজনের প্রিয় জলখাবার বলতে হিঙের কচুরি এবং আটার পুরি | শালপাতার বাটিতে দুটো করে ফুলকো কচুরি অথবা পুরি , তার ওপরে দেওয়া হয় এক হাতা আলুর তরকারি। বেনারসের সব কচুরির দোকানের আলুর তরকারিতে একটা বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা যায় | এই তরকারিতে কালো চানা বা ছোলা থাকবেই সঙ্গে তরকারির ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য লাউ অথবা কুমড়ো জাতীয় একটা সবজী থাকে যেটা আলুর থেকে তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় এবং গলে গিয়ে তরকারির ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। পুরি-সবজির পর মিষ্টিমুখ করতে পারেন জিলাবো বা বড় সাইজের জিলিপি দিয়ে , তবে তা অবশ্যই বেনারসী স্টাইলে দই দিয়ে |
হিঙের কথা যখন উঠল তখন না বললেই নয় , পাড়ামাতানো হিঙের কচুরি বা নিরামিষ আলুরদম কিংবা নারকেল দেওয়া ছোলার ডাল বানাতে কাশীর সুবাসিত হিং এক চিমটেই যথেষ্ট | অনেক মুদিখানার দোকানেই পাবেন | তবে কেদারঘাটের কাছে দুইভাইয়ের দোকানের হিঙে ঠকবার ভয় নেই | কাশীর বাঙালী টোলায় যে কয়েকঘর বাঙালি ইডলি-ধোসা আর ফিল্টার কফির সঙ্গে টক্কর দিয়ে আজো বাঙালির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে তাদের মধ্যে হাওড়ার বালি থেকে আসা এই পরিবারটি অন্যতম | বড়ভাইয়ের স্ত্রী মা অন্নপূর্ণার মতো দক্ষ হাতে দোকান সামলান | সঙ্গে থাকেন তাঁর স্বামী , দেওর আর ছেলে | কলকাতা থেকে এসেছেন কিংম্বা বাঙালি শুনলেই পরমাত্মীয়ের মতো আপন করে নেবেন |
সাম্প্রতিককালে ভারতের এই প্রাচীনতম জনপদে আগত বিদেশী পর্যটকদের খাতিরদারির জন্য প্রাতঃরাশ তার চিরাচরিত ভোল বেশ অনেকটাই পাল্টেছে। অলি গলিতে গজিয়ে ওঠা ছোটোখাটো ফাস্টফুড সেন্টারে টোস্ট , নুডলস , পিৎজা জাতীয় ফিরিঙ্গি জলযোগের বৈচিত্র্য দেখে এ কথাটা সহজেই অনুমান করা যায়। চক এলাকার আশি বছরের পুরোনো দোকানে বিখ্যাত দোকান ‘লাক্সমি চায় ওয়ালা’ এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য | এখানে অনেক ধরণের ব্রেড টোস্ট পাওয়া যায় | তবে তারমধ্যে জনপ্রিয় হল সিজারিয়ান মালাই টোস্ট | স্টিলের ছোট রেকাবিতে দু পিস্ হৃষ্টপুষ্ট পাউরুটির টুকরো যার সঙ্গে ছোটবেলার টিফিনবক্সে মায়ের বানানো মাখন মাখানো চিনি পাউরুটির অনেকটা মিল থাকলেও বিস্তর তফাৎ। ব্রেড স্লাইসের পেটের মধ্যে ছুরি ঢুকিয়ে একটা পকেট মতো বানিয়ে তাতে বেশ খানিকটা মাখন পুরে দেওয়া হয়েছে। তারপর সেঁকা হয়েছে তারের জালিতে ভরে | এখানেই শেষ নয় | ওই মাখন-হৃদয় পাউরুটির পিস দুটোকে এবার সযত্নে মালাইয়ের পুরু কম্বলে মুড়ে স্টিলের রেকাবিতে শুইয়ে পরিবেশন করা হয় | এই দোকানে চা ও পাওয়া যায় |
আপনি যদি ‘চাটুরে’ হন অর্থাৎ চুটপুটে চাট পকোড়া ফুচকার প্রতি বিশেষভাবে অনুরক্ত হন , তাহলে বেনারস আপনার জন্য জানবেন বেনারস আপনার রসনাকে সিক্ত করার বাসনায় বিভিন্ন ধরণের চাটের পসরা সাজিয়ে রেখেছে তার গলি-মহল্লায় | কাশীর অলিগলি হোক বা রাজপথ সর্বত্র চাট-পকোড়ার দোকান দেখতে পাওয়া যায় | স্থানীয় অধিবাসীদের মতে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ হল ‘ কাশী চাট ভাণ্ডার’ | দহি পুরি বা দই ফুচকা, আলুটিক্কি অনেক দোকানেই পাবেন কিন্তু , চূড়ামটর বা চিঁড়ে মটর বা চিঁড়ের চাট ‘কাশী চাট ভাণ্ডারের সিগনেচার ডিস্ |
এককালে বাঙালি স্বাস্থ্য ফেরাতে বা ‘হাওয়া বদল’ করতে পশ্চিমে যেত | এই পশ্চিম বলতে মধুপুর , দেওঘর | দেওঘরের এলাচগন্ধী হালকা মিষ্টি মোষের দুধের পেঁড়া যাঁরা খেয়েছেন তাঁরা কাশীর কড়াপাকের ঘি চপচপে লালপেঁড়ার সঙ্গে এর কোনো মিল পাবেন না ঠিকই , কিন্তু লাল পেঁড়ার স্বাদও অতুলনীয় | কাশীর সর্পিল গলি আগলে আড়াআড়ি ভাবে বসে থাকা ষাঁড়ের কারণে সৃষ্ট অযাচিত যানজটে আটকে পড়লে বিরক্ত না হয়ে এদিক ওদিক একটু চোখ ঘোরালেই দুএকটা ক্ষীর-মালাই-রাবড়ির দোকান ঠিক চোখে পড়বে | এ দৃশ্য কাশীর অতি পরিচিত দৃশ্য | ছোট্ট দোকানের একপাশে লোহার বড় চ্যাটালো কড়াইতে দুধ জ্বাল দেওয়া হচ্ছে , কড়াইয়ের গায়ে রাবড়ির জন্য কাঠি দিয়ে তুলে রাখা সর আর জ্বাল দিয়ে ঘন করা লালচে ক্ষীরের হালকা পোড়া পোড়া মিষ্টি সুবাস নাকে এলে বুঝবেন কেন জ্ঞানী জনেরা লিখে গেছেন “ঘ্রানেন অর্ধ ভোজন” | বাকি অর্ধেকটাও সেরে ফেলতে মন হাঁকুপাঁকু করবে , করবেই |
তবে শুধু বেনারসের লাল পেঁড়া , ক্ষীর , রাবড়িতে মন না ভরলে ঘুরে আসতে পারেন ঠাঠেরি বাজারের রাম ভাণ্ডারে | মাণিক বাবু তাঁর বিখ্যাত সিনেমা জয় বাবা ফেলুনাথে এই দোকানের উল্লেখ করেছিলেন , মনে পরে ? গল্পের ক্লাইম্যাক্সে বিকাশকে দশমীর মিষ্টি আনতে পাঠানো হয়েছিল রাম ভাণ্ডারে ? দেড়শো বছরের পুরোনো এই নির্ভরযোগ্য মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় মিষ্টি গুলির মধ্যে তেরঙ্গা বরফি , মগদল , মধুরমিলন , রাধাপ্রিয়া, কেশরীয়া, কাজু বরফি, চকলেট বরফি, লাল পেঁড়া , ক্ষীরকদম , কাজু জিলিপি , বালুশাহী , চন্দ্রমুখী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কাশীবাসের মধুরেণ সমাপয়েৎ করার সময় বাড়ির জন্য মিষ্টি কিনতে হলে একবার ঘুরে আসতে পারেন |
ওজনদরে ঘি চপচপে মুগের নাড়ু ন্যায্য দামে কিনতে হলে যেতে পারেন সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দিরের সামনে |
কাশীর আরেকটি বিখ্যাত মিষ্টি হল ‘মালাইয়ো’ । মা যশোদা তার ননীগোপাল জন্য যে পদ্ধতিতে দুধ মন্থন করে মাঠা তুলতেন সেভাবেই বানানো হয় এই মালাইয়ো | মাঠা তোলার আগে জ্বাল দেওয়া কেশরের গন্ধযুক্ত ঘন দুধকে রাতভর শিশিরে ঠান্ডা হতে রেখে দেওয়া হয় খোলা আকাশের নিচে | তাই এই অমৃতসম মালাইয়ো শুধুমাত্র শীতকালেই পাওয়া যায় |
গোধুলিয়ার মোড়ে অনেক লাস্যির দোকানে সিদ্ধির লাস্যি বা ভাঙ মেশানো লাস্যি পাওয়া যায় | নিজের ওপর যথেষ্ট আস্থা থাকলে কাশীশ্বর বিশ্বনাথের নাম করে ‘ দো ঘুট ‘ গলায় চাইলে ঢালতেই পারেন , তবে পরের ঘটনা বা দুর্ঘটনার জন্য ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’।
সবই যখন হল , ট্রেনে চাপার আগে একখিলি বেনারসী পান মুখে দিতে ভুলবেন না যেন।