রান্না

কাঁচাগোল্লার কাহিনী

অনেক দিন আগের কথা, অবিভক্ত বাংলা তখন ইংরেজদের শাসনাধীন। রাজশাহী জেলার লালবাজারে এক মিষ্টির দোকানের মালিক মধুসুদন পাল আজ বড় চিন্তায় আছেন। আর পাঁচটা দিনের মতোই রসগোল্লা, পান্তুয়া, চমচম বানানোর জন্য প্রায় দেড়-দু মন ছানা কাটানো হয়েছে আজ ভোরে; অথচ এক সাথে অনেকজন কারিগর আজ কাজে আসেনি, এত ছানা কি তবে নষ্ট হবে !

তিনি ভাবলেন ছানাটা চিনি দিয়ে অল্পকরে নেড়ে রাখলে হয়তো অতটা খারাপ হয়ে যাবে না। যা ভাবা তাই কাজ .. অতঃপর, চিনি ছানায় পাক খেয়ে যে বস্তু তৈরি হলো তাকে ছোট ছোট গোলাকার বলের আকারে তৈরীকরে দোকানে বেচবেন ঠিক করলেন।

ধবধবে সাদা, তুলতুলে নরম, সেই নধর-কান্তি মিষ্টির গুনকথা ক্রমশ লোক-মুখে ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে। খবর পৌঁছল সুদূর ইংল্যান্ডেও। প্রায় কাঁচা ছানা থেকে তৈরী এই মিষ্টির নাম দেয়া হলো কাঁচাগোল্লা। বিখ্যাত হলেন মধুসুদন পাল, প্রসিদ্ধ হলো মিষ্টির জন্মস্থান ‘নাটোর’। আর যার কারণে এতকিছু, সেই নধর-কান্তি ‘কাঁচাগোল্লা’ জায়গা করে নিলো আপামর মিষ্টি-প্রেমী বাঙালির হৃদয়ে।

 

1499060689380

গল্প শেষ, এবার কাজের পালা ; মিষ্টি-প্রেমী পাঠক-পাঠিকা যদি “কাঁচাগোল্লা” নামক এই নিরীহ ভালোমানুষ গোছের নধর-কান্তি বাঙালি বাবুটির প্রতি আকৃষ্ট হন, তবে আসুন বানিয়েফেলি। সময় বেশি লাগবে না; তার ওপর নাটোর যাওয়া তো সবার পক্ষে সম্ভব নয় ..

যা যা লাগবে –
〰〰〰〰〰

✔ঘরে কাটানো ছানা ( ফুল ক্রিম মিল্ক থেকে ) – ২ কাপ

✔গুঁড়ো দুধ -১ কাপ

✔গুড়ো চিনি -১ কাপ

🔴 ইচ্ছে অনুযায়ী চিনির পরিমান কমবেশি করতে পারেন ।

🔴 যদি কেউ চান, এতে ছোট এলাচের গুঁড়ো মেশাতে পারেন, তবে আমি মেশাইনি কারণ অমন গোরাচাঁদের মতো যার গায়ের রং তাতে কালো এলাচের গুড়ো গুলো চাঁদের কলঙ্কের মতো দেখতে লাগে।

🔴 এবার সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে অল্প আঁচে নেড়েচেড়ে তেলতেলে মোলায়েম হলে অর্থাৎ ক্রিম বেরোতে শুরু করলেই নামিয়ে নিয়ে অল্প ঠান্ডা করে ছোট ছোট বলের আকারে বানিয়ে ফেলুন আদুরে কাঁচাগোল্লা।

🔴 জনসমক্ষে পেশ করার জন্য এর ওপর কাজু/ কিসমিস / পেস্তা অথবা কেশর দিয়ে সাজাতে পারেন, তবে মনে হয়না তার দরকার আছে; ওকে না সাজলেও ভালোলাগে।
শ্রেয়া ঘোষালের ওই গানটা শোনেননি –

” जैसी हो वैसी ही आ जाओ
सिंगार को रहने दो। …”

 

1499060313160